
করোনার মধ্যেও বিদ্যুৎ বিল বিড়ম্বনা! কী ভাবছে সরকার??
গত মে মাসে স্বাভাবিকের থেকে ৪ থেকে ১০ গুণ বেশি বিল আসার অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সাধারণ মানুষ সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে বলে যানা যায়। কিন্তু বিদ্যুৎ অফিস থেকে বলা হয়েছে, চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে এই বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
তাই চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন ভোক্তারা। ঢাকা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রাফানি রাফা গত ১৭ বছর ধরে এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় বসবাস করে আসছেন। প্রতি মাসে তার বিদ্যুৎ বিল আসে গড়ে ৪০০০/- টাকার মতো ।
গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে এই বিল কিছুটা বাড়লেও শুধুমাত্র মে মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকার বিল পাঠানো হয়।
হঠাৎ এতো বেশি বিল আসার কারণ জানতে তিনি স্থানীয় বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানীর অফিসে যোগাযোগ করলেও কোন সদুত্তর পাননি। শুধু ১ মাসের বিল ২০ হাজার টাকা কিভাবে আসে?? মিস রাফা বলেন মে মাসে তো এতো গরমও পড়েনি তখন বৃষ্টি হয়েছিল। আবহাওয়া ঠান্ডা ছিল, এসিও ছাড়তে হয়নি। পরে বিদ্যুৎ অফিসে গেলে তারা জানায় এপ্রিল মাসের বিল অনুযায়ী গড় করা হয়েছে। কিন্তু এটা তো কোন যৌক্তিক কথা হতে পারে না।
মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ তাদেরকে মে মাসে স্বাভাবিকের চাইতে কয়েকগুণ বেশি বিল পরিশোধ করতে হয়েছে। একই অভিযোগ ঢাকার, বারিধারা, গুলশান, মিরপুর ও পান্থপথ এলাকার বাসিন্দাদের।
একই সংকট পল্লী বিদ্যুতেও
ভুতুড়ে বিল বিড়ম্ভনার চিত্র দেখা যায় পল্লী বিদ্যুতেও। খুলনার কয়রা উপজেলার বাসিন্দা জয়ন্ত মুখার্জিকে এই ভুতুড়ে বিলের ফাঁদে পড়তে হয়েছে। তিনি বলেন, গত এপ্রিল মাসে আমার বিল এসেছিল ৮০৩ টাকা। পরে দেখা যায় আসল বিল এসেছে মাত্র ৮২ টাকা মাত্র। মানে প্রায় ১০ গুণ বেশি বিল এসেছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কয়রা উপজেলার নিজ গ্রামে থাকছেন মি. মুখার্জি। খুলনা শহরে তিনি যে বাসায় থাকেন সেটি গত ৩ মাস ধরেই খালি পড়ে আছে। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে কোন বিদ্যুৎ খরচ হয়নি। অথচ ওই তিন মাসে মোট বিদ্যুৎ বিল প্রায় দুই হাজার টাকার মতো এসেছে। সেই বিল নিয়ে তিনি স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসে গেলে তাকে সমাধান দূরে থাক, বরং অসংলগ্ন ব্যবহার করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
কবে নাগাদ সমাধান হবে
বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, করোনাভাইরাসের কারনে বেশিরভাগ মানুষ ঘরে অবস্থান করায় বিদ্যুৎ বেশী ব্যবহার হয়েছে এবং মিটার না দেখে গড় বিল করায় এই বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
এ পর্যন্ত তার কাছে প্রায় ৫ লাখ অযৌক্তিক বিলের অভিযোগ পড়েছে। মন্ত্রী বলেন, ৪ কোটি গ্রাহকের মধ্যে আমরা অভিযোগ পেয়েছি সাড়ে চার লাখ থেকে ৫ লাখ গ্রাহকের। শতাংশের হিসেবে সেটা খুব কম। করোনাভাইরাসের কারণে বিল রিডাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার চেক করতে পারেনি। এই কারণে এমন গড়মিল দেখা গেছে।
এই অস্বাভাবিক বিল তৈরীর পেছনে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
এপ্রিল মাসের বিল অনুযায়ী মে মাসের বিল সমন্বয় করার মাধ্যমে সামনের দুই সপ্তাহের মাথায় সমন্বিতভাবে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।